Home » শ্রীলংকার সাবেক প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে গ্রেফতার

শ্রীলংকার সাবেক প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে গ্রেফতার

ব্যক্তিগত সফরে গিয়ে রাষ্ট্রীয় তহবিলের অপব্যবহারের অভিযোগে শ্রীলংকার সাবেক প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহেকে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ। গতকাল শ্রীলংকা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি তাকে গ্রেফতার করে।

0 মন্তব্য গুলি 3 জন দেখেছে 2 মিনিট পড়েছেন
ছবি : সংগৃহীত

প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তার বিদেশ সফর ঘিরে এ অভিযোগ আনা হয়েছে। স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল আদা দেরানা এ তথ্য জানায়।টেলিভিশনটির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্ত্রীর স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রনিল বিক্রমাসিংহের লন্ডন সফরের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তদন্তের অংশ হিসেবে কলম্বোয় সিআইডি কার্যালয়ে জবানবন্দি দিতে গেলে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

সিআইডির এক কর্মকর্তার বরাতে এএফপি জানিয়েছে, গ্রেফতারের পর বিক্রমাসিংহেকে রাজধানী কলম্বোর একটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। তার আগে তিনি সিআইডির কাছে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।

এএফপি জানিয়েছে, সাবেক এ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তিনি ২০২৩ সালে কিউবায় অনুষ্ঠিত জি৭৭ সম্মেলন থেকে ফেরার পথে যুক্তরাজ্যে ব্যক্তিগত সফরে গিয়েছিলেন। সেই সফরে বিক্রমাসিংহে ও তার স্ত্রী ওলভারহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন। শ্রীলংকার পুলিশের দাবি, এটি ছিল একটি ব্যক্তিগত সফর, যার ব্যয় বহন করেছে রাষ্ট্র। তবে বিক্রমাসিংহে এমন অভিযোগ বরাবরই নাকচ করে দিয়েছেন।

রনিল বিক্রমাসিংহের গ্রেফতার শ্রীলংকার রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তার সমর্থকরা এ গ্রেফতারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করছেন। তারা মনে করছেন, এটি বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনের একটি কৌশল। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, দুর্নীতি দমন ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্যই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রীলংকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো জটিল হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

banner

গ্রেফতারের পর এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলেও বিক্রমাসিংহের কার্যালয় সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

বিবিসি সিনহালা জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় বিক্রমাসিংহে মোট ২৩টি বিদেশ সফর করেন, যার জন্য সরকারের ব্যয় হয়েছে ৬০০ মিলিয়ন রুপি (প্রায় ২০ লাখ ডলার)।

বিক্রমাসিংহে ১৯৯০-এর দশক থেকে শুরু করে ছয়বার শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, যা দেশের একজন রাজনীতিক হিসেবে রেকর্ড। তিনি একজন আইনজীবীও। ২০২২ সালে দ্বীপরাষ্ট্রটির ভয়াবহ আর্থিক সংকটের সময় তিনি প্রেসিডেন্ট হন। ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে গোতাবায়া রাজাপক্ষে শ্রীলংকা থেকে পালিয়ে গিয়ে পদত্যাগ করলে ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) নেতা বিক্রমাসিংহে দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দেশটিকে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পথে ফেরানোর জন্য ব্যাপকভাবে বিক্রমাসিংহের প্রশংসা করা হয়।

রাজনীতিক ও ব্যবসায়ী পরিবারে জন্ম নেয়া বিক্রমাসিংহে ১৯৭৮ সালে ২৯ বছর বয়সে শ্রীলংকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জুনিয়াস রিচার্ড জয়বর্ধনের (তার চাচা) মাধ্যমে দেশের সবচেয়ে তরুণ মন্ত্রিসভার সদস্য হন।

১৯৯৪ সালে ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডে দলের কয়েকজন শীর্ষ নেতা নিহত হওয়ার পর বিক্রমাসিংহে ইউএনপির নেতা হন।

সূত্রঃ বণিক বার্তা

এই সম্পর্কিত আরো পোস্ট দেখতে পারেন

কমেন্ট লিখুন