Home » দেশে বেকারদের সাড়ে ১৩% স্নাতক ডিগ্রিধারী

দেশে বেকারদের সাড়ে ১৩% স্নাতক ডিগ্রিধারী

0 মন্তব্য গুলি 1 জন দেখেছে 3 মিনিট পড়েছেন

দেশে এক বছরের ব্যবধানে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে এক লাখ ৬০ হাজার। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বেকারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ২০ হাজারে, যা ২০২৩ সালে ছিল ২৪ লাখ ৬০ হাজার। মোট বেকারের মধ্যে ১৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রিধারী। এ ছাড়া দেশে কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী কমেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন বলছে, বেকারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। শিক্ষায় এর একটু নিচের স্তর উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করা বেকারের হার ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ। মোট বেকারের মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের পড়ালেখা শেষ করাদের হার ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। আর কোনো রকম আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই– বেকারত্বে এদের হার সবচেয়ে কম, মাত্র ১ দশমিক ২৫ শতাংশ।

বেকারত্বের সংজ্ঞা নির্ধারণে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) নীতি অনুসরণ করে থাকে বিবিএস। কর্মক্ষম তবে কোনো কাজে নিয়োজিত নয়, কাজ খুঁজে বেড়ায় এবং সুযোগ পেলে কাজে যোগ দিতে প্রস্তুত থাকে– এ ধরনের ব্যক্তিকে বেকার বলা হয়। তবে সপ্তাহে মাত্র এক ঘণ্টা মজুরির বিনিময়ে কাজ করার সুযোগ পেলে তাকে বেকার হিসেবে ধরা হয় না। পরিবারের জন্য হাঁস-মুরগি পালন করলেও তাকে বেকার বলা যাবে না। এমনকি উৎপাদনশীল কাজে মজুরি না পেলেও তাকে বেকার বলা হয় না। ১৫ বছর এবং তার বেশি বয়সীদের শ্রমশক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সারাদেশে এক হাজার ২৮৪টি প্রাথমিক নমুনা এলাকাকে জরিপের তথ্য সংগ্রহের জন্য নির্বাচিত করা হয়। এর মধ্যে দৈব চয়নের ভিত্তিতে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। চার প্রান্তিক মিলে পরিবারের মোট সংখ্যা ছিল এক লাখ ২৩ হাজার ২৬৪।

বেশি বেকার ঢাকা বিভাগে
বিবিএসের প্রতিবেদনে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি বেকার ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগে ছয় লাখ ৮৭ হাজার বেকার। এর পরের দুটি স্থানে আছে যথাক্রমে চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগ। চট্টগ্রাম বিভাগে পাঁচ লাখ ৮৪ হাজার, রাজশাহীতে তিন লাখ ৫৭ হাজার, খুলনায় তিন লাখ ৩১ হাজার, সিলেটে দুই লাখ ১৬ হাজার, রংপুরে দুই লাখ ছয় হাজার, বরিশালে এক লাখ ৩৯ হাজার এবং ময়মনসিংহ বিভাগে এক লাখ চার হাজার বেকার আছে।

banner

প্রতিবদেনে দেখা যায়, গ্রাম-শহর এবং নারী-পুরুষ দুই পর্যায়েই শিক্ষিত বেকারত্বের হার নিরক্ষর বেকারত্বের চেয়ে বেশি। শহরে শিক্ষিত নারীর বেকারত্ব হার তুলনামূলক বেশি। শহরে এ হার ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। অন্যদিকে গ্রামে শিক্ষিত নারীর বেকারত্বের হার প্রায় ৩ শতাংশ।

বেড়েছে পুরুষ বেকার
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে পুরুষ বেকার ১৮ লাখ এবং নারী বেকার আট লাখ ২০ হাজার। দেশে বেকারের হার বেড়ে ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ হয়েছে, যা আগের বছর ছিল ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। ২০২৪ সাল শেষে দেশে পুরুষ বেকারের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮ লাখ, যা এক বছর আগে ছিল ১৬ লাখ ৪০ হাজার। এ সময় কোনো নারী বেকার হয়নি। নারী বেকারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট লাখ ২০ হাজার। এক বছর আগেও নারী বেকারের সংখ্যা একই ছিল। অর্থাৎ পুরুষ বেকার বেড়েছে। বর্তমানে দেশে পুরুষ বেকারের হার ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং নারী বেকারের হার ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

কর্মে নিয়োজিত শ্রমশক্তি কমেছে 
বিবিএসের জরিপে বলা হয়েছে, ২০২৪ সাল শেষে দেশে কর্মে নিয়োজিত বা শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৮ দশমিক ৯০ শতাংশ। আগের বছর ২০২৩ সালে এ হার ছিল ৬০ দশমিক ৯০ শতাংশ। অন্যদিকে ২০২৪ সাল শেষে দেশের পাঁচ কোটি ৫০ হাজার মানুষ শ্রমশক্তির বাইরে রয়েছে, যা ২০২৩ সালে ছিল চার কোটি ৭১ লাখ ৭০ হাজার। এ সময়ে কৃষি, সেবা এবং শিল্পসহ সব খাতে কমেছে কর্মে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী। কমেছে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যাও। দেশে বর্তমানে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমে সাত কোটি ১৭ লাখ ৩০ হাজার হয়েছে, যা ২০২৩ সালে ছিল সাত কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার। ফলে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমেছে ১৭ লাখ ২০ হাজার জন। পুরুষ ও নারী শ্রমশক্তি কমেছে। দেশে যুব শ্রমশক্তি দুই কোটি ২৬ লাখ, যা ২০২৩ সালে ছিল দুই কোটি ৬৭ লাখ।

“সুত্র: দৈনিক সমকাল”

এই সম্পর্কিত আরো পোস্ট দেখতে পারেন

কমেন্ট লিখুন