আওয়ামী লীগের যেমন কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে তেমনি জাতীয় পার্টির ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে যমুনায় বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে একথা বলেন জামায়াতের নায়েবে আমির সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির ব্যাপারে সুস্পষ্ট করে বলেছি, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের কার্যক্রম যেভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তেমনিভাবে জাতীয় পার্টিকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে।’
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপরে যেভাবে হামলা হয়েছে তা ন্যক্কারজনক, দুঃখজনক বলাতে কাভার করে না। নুরের ওপরে হামলা হয়েছে, এর ষড়যন্ত্র গভীরে। এর সঙ্গে যারা যারা জড়িত তাদের শনাক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছি। আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে জাতীয় পার্টি। সুতরাং আওয়ামী লীগের ব্যাপারে সেরকম সিদ্ধান্তই নেওয়া যেতে পারে বলেও আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছি।’
সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মাদ তাহের বলেন, ‘জুলাই সনদের ক্ষেত্রে ১৯টা বিষয় নিয়ে আমরা সকল রাজনৈতিক দল ঐকমত হয়েছি। এগুলো আমরা মনে হয় ঐকমত্য পোষণের ক্ষেত্রে একটা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে অল্পসংখ্যক দল আমাদের ঐকমত্য পোষণের ১৯ বিষয় বাস্তবায়ন ও আইনি ভিত্তি দিতে কিছুটা বাধা দিচ্ছে। তারা বলছে, আগামী নির্বাচিত সরকার আসলেই এগুলো বাস্তবায়ন হবে। আগামী সরকার এসে যদি এটা বাস্তবায়ন করে তাহলে আমরা ঐকমত্য কমিশনে এ সময় নষ্ট করলাম কেন? তাহলে এই সংস্কারটা তো পরবর্তী সরকারই উদ্যোগ নিতে পারত। জুলাইয়ের যে চেতনা আমরা সেটাতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এটা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি বলি আমাদের ইমানের তিনটি অংশ। তার একটি হচ্ছে মুখে স্বীকৃতি দেওয়া, হৃদয়ে ধারণ করা এবং কার্যে পরিণত করা। এই তিনটা হলেই ঈমান পরিপূর্ণ। আমাদের চার্টার যেগুলো হয়েছে তারও তিনটি অংশ। একটি অংশ ঐকমত্যে পৌঁছানো। দুই নম্বর হচ্ছে আইনি ভিত্তি দেওয়া এবং তিন নম্বর হচ্ছে এটা বাস্তবায়ন করা। এখন পর্যন্ত আমরা যেসব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছি, সেগুলোর আইনি ভিত্তি দিতে দু-একটি দল বাধা দিচ্ছে। তারা একমত হচ্ছে না। আমরা স্পষ্ট বলে আসছি, জুলাই বিপ্লবের পর আমরা আরও অনেক পরিবর্তন চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা হয়নি। কমপক্ষে ন্যূনতম সংস্কারের যে জায়গাটি, যেটা প্রধান উপদেষ্টার ওয়াদা সেটা যেন অবশ্যই আইনি ভিত্তির মাধ্যমে এখনি কার্যকর করা হয়।’
এর আগে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করতে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে প্রবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দল।
ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহেরের নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- দলের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও ড. হামিদুর রহমান আযাদ (সাবেক এমপি)।
“সুত্র: দৈনিক সমকাল”