বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নসহ তিন দফা দাবিতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় একাডেমিক ভবন-১-এর নিচে তাঁরা অনশন শুরু করেন। তাঁদের অনশন ভাঙাতে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তৌফিক আলম চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে তিনি শিক্ষার্থীদের পাশে মশারি টানিয়ে রাতভর অবস্থান করেন।
আজ শুক্রবার দুপুরেও শিক্ষার্থীদের অনশন কর্মসূচি অব্যাহত ছিল। এর আগে সকালে উপাচার্য সেখান থেকে চলে যান। অনশনরত শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন।
অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন ইংরেজি বিভাগের শারমিলা জামান সেঁজুতি, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অমিয় মণ্ডল, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের তাজুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের আবুবকর সিদ্দিক, দর্শন বিভাগের পিয়াল হাসান, লোকপ্রশাসন বিভাগের তামিম আহমেদ রিয়াজ, আইন বিভাগের শওকত ওসমানসহ আরও কয়েকজন।
গতকাল রাত ১০টার দিকে তিন দফা বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীরা অনশন শুরু করলে রাত ১টার দিকে উপাচার্য কর্মসূচিস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই কার্যক্রমের অগ্রগতি প্রকাশ পাবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের পাশে রাতে অবস্থান করেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, তিন দফা দাবিতে গত ২৯ জুলাই মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর গত ১৪ আগস্ট থেকে টানা এক সপ্তাহ বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। মানববন্ধন, গণস্বাক্ষর, বিক্ষোভ, অবস্থান কর্মসূচি ও মহাসড়ক অবরোধের পরও কোনো আশ্বাস না পেয়ে তাঁরা অনশন শুরু করতে বাধ্য হয়েছেন।
শিক্ষার্থী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ইউজিসির প্রতি আহ্বান জানিয়ে দুবার সংবাদ সম্মেলন করেছি। ৩৭ দিন ধরে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছি। কিন্তু ইউজিসির কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ পর্যন্ত করেননি। আমাদের সঙ্গে যদি কেউ যোগাযোগ করে কোনো প্রতিশ্রুতি না দেন, তাহলে অমরণ অনশন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
শিক্ষার্থী শওকত ওসমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পেরোলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো তৈরি হয়নি। ১০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য চারটি আবাসিক হলে জায়গা রয়েছে মাত্র দেড় হাজার শিক্ষার্থীর। শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক, আবাসন, পরিবহন ও গ্রন্থাগারের সংকট তীব্র। এতে সেশনজট বাড়ছে। ফলে বাধ্য হয়ে তাঁদের অনশনে বসতে হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাহাত হোসাইন বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক। উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান। জমি অধিগ্রহণের কাজ নানা ধাপে এগোচ্ছে। তবে আস্থার সংকটের কারণে অনশন পর্যন্ত পৌঁছেছেন শিক্ষার্থীরা।
“সুত্র: দৈনিক প্রথম আলো”