তৃণমূলের সংবাদ ডেস্ক:
সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নে ১৯১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত কে এম ইনস্টিটিউশনের জমি নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। জমিদার ক্ষিতি মোহন লাহিড়ী প্রতিষ্ঠানের নামে ১৩ বিঘা জমি দান করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে সেই ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ের প্রবেশপথের দক্ষিণে জায়গা দখল করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে।
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্থানীয় প্রভাবশালী মোঃ রাকিবুল ইসলাম দুলাল, মোঃ আব্দুস সামাদ, মোঃ শাহেদ, গোলবার, মোঃ আব্দুল কুদ্দুস ও আলাউদ্দিন অবৈধভাবে স-মিলসহ ৮টি দোকানঘর নির্মাণ করেন। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবিতে ২০২৩ সালের ২১ জুন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু হান্নান জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে আবেদন করেন। তবে তখন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
পরবর্তীতে দীর্ঘ প্রায় দুই বছর পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) লিটুস লরেন্স চিরানের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ২২ মে জেলা প্রশাসক সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফজলে রাব্বিকে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে উচ্ছেদের নির্দেশ দেন।
গত ১৪ জুলাই ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বি বেকু ও শ্রমিক নিয়ে উচ্ছেদ অভিযানে গেলেও পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হওয়ায় অভিযান স্থগিত করে ফিরে আসেন। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে নানা গুঞ্জন শুরু হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, অবৈধ দখলদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় ইউএনওর মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেটকে অভিযানে নিষেধ করা হয়। এমনকি ইউএনও হোয়াটসঅ্যাপে উচ্ছেদ না করার বিষয়টি তাঁকে অবহিত করেন বলেও দাবি করেন তিনি।
ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বি গণমাধ্যমকে বলেন, “উচ্ছেদ অভিযানে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ থাকায় সেদিন অভিযান স্থগিত করতে বাধ্য হই। সরকারি অভিযানে অনেক সময় আইনগত ক্ষমতা থাকলেও বাস্তবতা বিবেচনা করতে হয়।” তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা পেলে আবারও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এদিকে প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু হান্নান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দ্রুত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বিদ্যালয়ের জমি ফিরিয়ে না দিলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীকে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, “খুব শীঘ্রই অভিযানের পুনঃনির্দেশনা দেওয়া হবে।”
স্কুলের জমি দখল নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।