তৃণমূলের সংবাদ ডেস্ক:
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন দেশের ইতিহাসের সর্বকালের সেরা নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে কিভাবে ‘সেরা নির্বাচন’ হবে — যদি কারো অংশগ্রহণই বাদ দেওয়া হয় — তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাংবাদিক, কলামিস্ট ও চর্চার সম্পাদক সোহরাব হাসান।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সোহরাব হাসান।
তিনি জানান, ‘‘আমরা কারিগরি সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছি। কিন্তু রাজনৈতিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা কম হয়েছে। আমাদের একটা ধারণা হয়েছে যে পাঁচজন নির্বাচন কমিশনার মঙ্গলগ্রহ থেকে এসেছেন — সব কিছুর দায় তাদের। আমরা অন্যায় করব, অনিয়ম করব, ভোট জালিয়াতি করব, চুরি করব, ভোটার আনতে দেব না—তবে ইসিকে কাজটা করতে হবে। এটা সম্ভব নয়।’’
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘‘নির্বাচন করে জনগণ; কিন্তু ভোটাধিকার নিশ্চিত করা সরকারের, ইসির ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব। তারা সহায়তা না করলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’’
নির্বাচন কমিশনারদের উদ্দেশ্যে সোহরাব বলেন, ‘‘আপনাদের কাছে নির্বাচন করার মানসিকতা থাকতেই হবে, তবে নির্বাচন না করার মানসিকতাও থাকতে হবে। যদি বিবেচনায় মনে করেন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, তাহলে নির্বাচন থেকে সরে আসা বা পদত্যাগ করাও উচিত। আমি বিগত ইসিকেও এ কথা বলেছি। নির্বাচন মানে বাছাইয়ে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা — সেটা না থাকলে পরিস্থিতি চিন্তার বিষয়।’’
তিনি জানান, ‘‘আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি হলো জয়লাভের প্রবণতা। সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় হিসেবে যে শক্তি দাঁড়াবে, তার বিরুদ্ধে আমরা প্রতিরোধ করব — কিন্তু আমরা সেই শক্তি হারিয়ে ফেলেছি। সব প্রার্থী একই মঞ্চে প্রচার করার ব্যবস্থা করলে কালো টাকার প্রভাবও কমবে।’’
সোহরাব আরো বলেন, ‘‘কিছু দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করার প্রস্তুতি চলছে—এক পক্ষকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়ার কথাও চলছে। ঐকমত্য কমিশনে ৩০টি দলের সঙ্গে কথা হয়েছে; সেখান থেকেই যদি কেউ নির্বাচনে না যায়, তাহলে পরিস্থিতি কী হবে, সে বিষয়টা ভাবতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন—সেরা নির্বাচন হবে। তাহলে কাউকে বাদ দিয়ে কিভাবে সেরা নির্বাচন হবে?’’