বিশেষ প্রতিনিধি:
নারীদের প্রতি সহিংসতা, নির্যাতনের মাত্রা যেমন দিন দিন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে লাশের সংখ্যা । ২০২৫ সালের সাত মাসে স্বামীর কর্তৃক খুন হয়েছেন ১১৩ জন নারী। এমন চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে এসেছে একাধিক জরিপের।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জাতীয় নারী সুরক্ষা হেল্পলাইন ‘১০৯’-এর তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের শিকার নারীরা সহায়তা চেয়ে কল করেছে অনেকবার। এবং তাদের কাছে কল এসেছে মোট ৪৮ হাজার ৭৪৫টি।
জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’-এর তথ্য অনুসারে, গত জানুয়ারি থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত নারী নির্যাতনের ঘটনায় কল এসেছে ১৭ হাজার ৩৪১টি। এর মধ্যে পারিবারিক নির্যাতনের অভিযোগের কল এসেছে অসংখ্যবার। শুধু স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে কল এসেছে ৯ হাজার ৩৯৪টি।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত অসংখ্য পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ৭ মাসে এই ঘটনা ঘটেছে ৩৬৩ টি। এর মধ্যে ২০৮ জন নারী ও শিশু হত্যার শিকার হয়েছে। আর আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন ১১৪ জন।
তারা বলছে, সবচেয়ে বেশি হত্যার ঘটনা ঘটেছে স্বামীর হাতে, ১৩৩ জন নারী এ হত্যার শিকার। ৪২ জন নারী স্বামীর পরিবারের সদস্যদের হাতে। আর ৩৩ জন নারী হত্যার শিকার হয়েছেন নিজ পরিবারের সদস্যদের হাতে।
উপরোক্ত তথ্য, উপাত্য, পরিসংখ্যান গুলো একদিকে যেমন আমাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ ঘটায় পাশাপাশি বিশ্বে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করে। বর্তমান সরকার এই সহিংসতা এবং হত্যাকাণ্ডগুলো এড়াতে যুগ উপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং পালন করবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা ।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং বিচারবিভাগ নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ এবং দ্রুততার সাথে বাস্তবায়ন করবেন। আইনের যথাযথ প্রতিফলন ঘটলে এবং দোষীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পেলে সমাজ থেকে এ ধরনের সহিংসতা কমে যাবে। মানুষ অপরাধ করতে ভয় পাবে। একটা সময় হয়তো এই ধরনের অপরাধ এর সংখ্যা শুন্য তে এসে দাঁড়াবে। এমনটাই আমাদের সমাজের প্রতিটা মানুষের চাওয়া।