আরও একবার সুরের মূর্ছনা ছড়ালেন দেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। আবারও তার কণ্ঠের জাদুতে মুগ্ধ করলেন সবাইকে। সন্মাননা জানানোর অনুষ্ঠানটি হয়ে উঠল ভিন্ন কিছু। প্রিয় সহকর্মীদের নিয়ে মনমাতানো গল্প আর গানে গানে মধুর একটি সন্ধ্যা উপহার দিলেন গানের পাখি।
গত রবিবার সন্ধ্যায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদান করা হলো একুশে ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনকে। অনুষ্ঠানের উপস্থাপক বরেণ্য মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আফজাল হোসেন যখন বিশেষ এই সম্মাননা গ্রহণের জন্য সাবিনা ইয়াসমিনের নাম ঘোষণা করেন, তখন অন্যরকম এক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনের নিচে এবং ওপরে উপস্থিত শত শত দর্শক করতালির মধ্যদিয়ে সাবিনা ইয়াসমিনকে অভিনন্দন জানান। রাষ্ট্রীয় সম্মাননা গ্রহণের সময় সাবিনা ইয়াসমিনেরই দীর্ঘদিনের সহকর্মী খুরশীদ আলম, রফিকুল আলম, আবিদা সুলতানা-সহ পাশে আরও উপস্থিত ছিলেন ফেরদৌস আরা, নকিব খান, পার্থ বড়ুয়া ও আগুন।
সম্মাননা গ্রহণ শেষে সাবিনা ইয়াসমিন মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী-সহ উপস্থিত সব নিমন্ত্রিত অতিথি, দর্শকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’ নামক অনুষ্ঠানটি মূল পর্ব শুরুর আগে শিল্পকলা একাডেমির সিনিয়র নৃত্যশিল্পী ইয়াসমিন লাবণ্য-সহ আরও বেশ কয়েকজন শিল্পী দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন সাবিনা ইয়াসমিনেরই গানে।
এরপর আসে সেই অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে সাবিনা ইয়াসমিন একে একে সংগীত পরিবেশন শুরু করেন। শুরুতেই তিনি দেশাত্মবোধক গান ‘সুন্দর সুবর্ণ তারুণ্য লাবণ্য’ গানটি পরিবেশন করেন। এরপর তিনি ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো’, ‘ফুল যদি ঝরে গিয়ে আজকে রাতে’, ‘শত জনমের স্বপ্ন’, ‘অশ্রু দিয়ে লেখা এ গান’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘আমি আছি থাকব’, ‘ইশারায় শিষ দিয়ে’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’ ও ‘সে যে কেন এলো না’ গানগুলো পরিবেশন করেন। প্রতিটি গানের ফাঁকে ফাঁকে সাবিনা ইয়াসমিনকে মূল্যবান কথা বলেন উপস্থিত সংগীত ব্যক্তিত্বরা।
পুরো আয়োজনকে ঘিরে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘সব মিলিয়ে পুরো আয়োজনটি আমার কাছে সত্যিই দুর্দান্ত লেগেছে, ভীষণ ভীষণ ভালো লেগেছে। কারণ জাতীয় পর্যায়ে এমন করে এককভাবে এই রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পাওয়া বিরাট একটি বিষয়। আগে এভাবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে শিল্পকলার ব্যবস্থাপনায় এভাবে এককভাবে কাউকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে কি না আমি জানি না, তবে এই আয়োজনের নেপথ্যে যারাই ছিলেন বিশেষত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা-সহ আরও যারা মন্ত্রণালয়ের, শিল্পকলার নেপথ্যে থেকে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ এবং এই পুরো আয়োজনের জন্য আমি সত্যিই অনেক অনেক আনন্দিত। আন্তরিক ধন্যবাদ আমার সব মিউজিশিয়ানদের প্রতিও।’
“সুত্র: দৈনিক দেশ রুপান্তর”