Home » গ্রেট ইসলামিক কোয়ালিশনে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে

গ্রেট ইসলামিক কোয়ালিশনে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে

0 মন্তব্য গুলি 7 জন দেখেছে 3 মিনিট পড়েছেন

বিশেষ প্রতিবেদক:

এখনই সময় এক কাতারে দাঁড়ানোর। সবাই ‘এক কাতারে’ দাঁড়াতে না পারলে ‘সামনের কাতার’ পুরা করা যাবে না। আর এবারের জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে সামনের কাতার পূরণ করতে না পারলে, বাংলাদেশে ইসলামী শক্তির কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।

বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামপন্থী দলগুলো জোটবদ্ধ হয়ে ‘গ্রেট ইসলামিক কোয়ালিশন’ গঠন করতে ব্যর্থ হলে, দেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌত্ব বিপন্ন হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে।

কোনো কারণে যদি এবারের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামপন্থীরা জোটবদ্ধ হতে না পারেন, তাহলে তার চরম খেসারত দিতে হবে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনগোষ্ঠীকে।

banner

এবারের নির্বাচনে জোটবদ্ধভাবে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে ‘জাতীয় শক্তিবলয়’ গড়তে না পারলে, নিকট ভবিষ্যতে ইসলামপন্থীদের ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়ার বাস্তবসম্মত অনেক কারণ রয়েছে।

সেই সঙ্গে ‘অরক্ষিত স্বাধীনতা’ তখন ‘পরাধীনতা’ হয়ে দেখা দিবে। বিলীন হয়ে যাবে চব্বিশের রক্তঝরা বিপ্লবের মাধ্যমে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ গড়ার কাঙ্খিত চেতনা। বিপন্ন হবে দেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্বও।

দেশের ইসলামপন্থীরা বিভক্ত হয়ে নির্বাচন করলে সবাইকে বিপদে পড়তে হবে। কারণ, ভোটের পর দেশের ইসলামী দলগুেলোকে সমূলে নিশ্চিহ্ন করার ভারতীয় পরিকল্পনাই প্রথমে বাস্তবায়িত হবে।

ফিলিস্তিনের গাজা এবং কাশ্মীরের মুসলমানদের মত করুন পরিণতি ভোগ করার এক ভয়াবহ ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের ইসলামী চিন্তা চেতনায় বিশ্বাসীদের সামনে। এবারের নির্বাচনের পরেই সেই পরিস্থিতির আঁচ পাওয়া যাচ্ছে।
“……………………………………………………………………………………..
পবিত্র কুরআনে সূরা আলে ইমরানের ১০৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ সুবহানুহু ওয়া তায়ালা বলেন, “ আর তোমরা সকলে মিলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং বিভক্ত হয়ো না। আর তোমরা তোমাদের উপর আল্লাহর নিয়ামতকে স্মরণ কর, যখন তোমরা পরস্পরের শত্রু ছিলে। তারপর আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ভালবাসার সঞ্চার করেছেন। অত:পর তাঁর অনুগ্রহে তোমরা ভাই-ভাই হয়ে গেলে।
………………………………………………………………………………………”
বাংলাদেশের ‘জাতীয় ঐক্যবিরোধী’ এবং ‘জাতীয় শক্তি বিনষ্টকারী’ ভারতীয় গুপ্তচররা জাতীয় নির্বাচনের জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। এই নির্বাচনে চব্বিশের বিপ্লবী চেতনায় উজ্জীবিত ইসলামপন্থী দলগুলোকে পরাজিত করার মাধ্যমে নিশ্চিহ্ন করার ব্লুপ্রিন্টও তৈরি করেছে তারা।

এবারের নির্বাচনে ইসলামপন্থীরা স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্বের অতন্দ্রপ্রহরী হিসেবে ‘এক জোট এক মার্কা’-এই নীতিতে অটল থাকতে পারলে এবং চব্বিশের বিপ্লব পরবর্তী জনআকাঙ্খা পূরণে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে পারলে, দেশপ্রেমিক জনতা ঐক্যবদ্ধ তাদের পক্ষেই দাঁড়িয়ে যাবে।

বাংলাদেশের ২০ কোটি মুসলমানের ভবিষ্যৎ ভাগ্য নির্ভর করছে আসন্ন নির্বাচনে ইসলামপন্থী দলগুলোর জোটবদ্ধ অবস্থান নিশ্চিত করা। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের মূলধারার সবচেয়ে বড় ইসলামী দল হিসেবে জামায়তে ইসলামীকেই অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে।

এবিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেছেন, ‘দেশ এবং উম্মাহর স্বার্থে আগামীতে ভালো কী করা যায়, সেটিই এখন আমাদের কাছে মুখ্য। এজন্য গতানুগতিক চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এখন বৃহত্তর স্বার্থে সবার মধ্যে দায়িত্ববোধের সূচনা হয়েছে। দলের নাম আলাদা হতে পারে, কিন্তু ইসলাম তো সবাই চায়।’

ইসলামপন্থী দলগুলোর জোটবদ্ধ নির্বচনের জন্য শুধু জামায়াতকেই দায় দিয়ে বসে থাকলে চলবে না। এগিয়ে আসতে হবে দেশপ্রেমিক ইসলামপন্থী সকল দল ও মতাদর্শিক গোষ্ঠীগুলোকেও।

পীর-মাশায়েখ এবং কওমী ঘরানার রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকাও এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের সামান্য ভুলের কারণে ইসলামী ঐক্যপ্রচেষ্টা বিফল হলে সবাইকে অস্তিত্ব সংকটে পড়তে হবে। বৃহত্তর স্বার্থে তাঁদের ছোটখাটো মতপার্থক্য বিসর্জন দিয়ে সবাইকে এক কাতারে দাঁড়াতে হবে।

এবিষয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব এবং দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘আমরা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোট করছি। সেটি শুধু ভোটের জন্য। বৃহত্তর স্বার্থে আমরা ইসলামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে একক প্রার্থী দেওয়ার চিন্তা করছি।

আগামী নির্বাচনে সামনের কাতারে যেতে হলে শুধু জামায়াত আর ইসলামী আন্দোলন নয়, এককাতারে দাঁড়াতে হবে সকল ইসলামী রাজনৈতিক দল, অরাজনৈতিক হেফাজতে ইসলাম এবং সর্ববৃহত দাওয়াতি মিশন তাবলীগ জামায়াতকেও।

দেশের গুরুত্বপূর্ণ ৮টি ইসলামী দলকে জোটবদ্ধ করতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রয়াস অনেকটাই সফল হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত এই সফলতা ধরে রাখা খুবই কঠিণ হবে। সবাইকে সবসময় সতর্ক না থাকতে হবে।

আরো যে সব ইসলামী দল রয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট ও খেলাফত আন্দোলনকেও সর্বশক্তি নিয়ে জোটবদ্ধ হওয়ার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে হবে।

এ ছাড়াও এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ এবং এনসিপিকেও এককাতারে আনতে হবে। এরসঙ্গে যুক্ত করতে হবে সকল ইসলামী ছাত্র সংগঠনকে।

ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতৃত্বে অন্যান্য ইসলামী ছাত্রসংগঠন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঐক্যবদ্ধ করে সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ গঠন করতে পারলে আগামীর নির্বাচনী চ্যালেঞ্জে বিজয়ী হওয়ার পথ রচনা করবে দেশের আপামর তৌহিদী জনতা।

এর ব্যতিক্রম হলেই ইলামপন্থীদের চলে আসতে হবে একদম পেছনের কাতারে। আর পেছনের কাতারে থাকলেই নাম উঠে যাবে ‘খতমের তালিকায়’।

……………………………..
ক্রাইসিস অ্যনালাইসিস

প্রতিবেদক: এফ শাহজাহান, বার্তা সম্পাদক, দৈনিক সাতমাথা, বগুড়া।

 

এই সম্পর্কিত আরো পোস্ট দেখতে পারেন

কমেন্ট লিখুন