প্রতিবেদক, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়:
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি অনুমোদনে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় ঢাকার সাথে উত্তরবঙ্গের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১০ আগষ্ট) সকাল ১১টা থেকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকার ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-পাবনা ও ঢাকা-রংপুর সড়ক বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৭ আগষ্ট) দুপুরে হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে উত্তরবঙ্গ অচল করে দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। রোববার ৪৮ ঘণ্টা পার হওয়ার পর তারা উত্তরবঙ্গের সকল মহাসড়ক বন্ধ করে দেয়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া হৃদয় সরকার, জাকারিয়া, সমুদ্র, মেরাজ, হাসানসহ একাধিক শিক্ষার্থীরা বলেন, আট বছর ধরে ভাড়া করা ভবনে নানা দুর্ভোগের মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের। সাত দফায় ডিপিপি সংশোধন করে ৯ হাজার ২৩৪ কোটি টাকার প্রকল্প প্রায় ৯৩ দশমিক ৫০ শতাংশ ব্যয় কমিয়ে ৫৯৯ কোটি ৫০ লাখ টাকায় নামিয়ে আনার পরও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পটি একনেক সভার এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। বিশ্বকবির নামে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতি অবিচার করা হয়েছে। আমরা বারবার আন্দোলন করার পরও শুধু আশ্বস্তই করা হয়েছে।
আমরা ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলাম। এই সময়ের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কোন ধরণের ইতিবাচক সাড়া তো দূরের কথা কেউ যোগাযোগও করে নি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা উত্তরাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছি।
শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মওলানা রফিকুল ইসলাম খান। শাহজাদপুরের সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে সাধারণ মানুষও এই কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে অংশ নিয়েছেন।
এদিকে উত্তরাঞ্চলের সকল রুট ব্লকেড করে দেওয়ায় দূর্ভোগে পড়েছে ঢাকামুখী হাজার হাজার যাত্রী। হাটিকুমরুল গোলচত্বরকে ঘিরে চারটি রুটে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে আছে। হাটিকুমরুল নির্মাণাধীন ইন্টারচেইঞ্চের দুটি বিকল্প সেতু দিয়ে কিছু যানবাহন চলাচল করলেও মূল সড়কগুলো সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়েছে।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ জানান, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা হাটিকুমরুল গোলচত্বরের ধোপাকান্দি এলাকায় ঢাকামুখী ও উত্তরবঙ্গগামী লেন বন্ধ করে বিক্ষোভ করছে। তবে দুটি ওভারপাস দিয়ে কিছু গাড়ী চলাচল করছে।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠার নয় বছরেও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হয়নি। ৭ দফায় ডিপিপি সংশোধন করে ৯৩ শতাংশ কমিয়ে এনে মাত্র ৫১৯ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাবনা দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত সেটির অনুমোদন না হওয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তারা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছে তাদের দাবি, হতাশা ও ক্ষোভের কথা জানিয়ে আসছেন। দাবী বাস্তবায়নে পদক্ষেপ না নেওয়ায় গত ২৬ জুলাই থেকে আবারও আন্দোলন শুরু হয়েছে। সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন, সাংস্কুতিক প্রতিবাদ ও গণসং যোগসহ নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। তাদের এই কর্মসূচির সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা একাত্বতা প্রকাশ করেছেন।