Home » ড. ইউনূসের প্রতি বিশ্বনেতাদের অটল সমর্থন

ড. ইউনূসের প্রতি বিশ্বনেতাদের অটল সমর্থন

0 মন্তব্য গুলি 5 জন দেখেছে 2 মিনিট পড়েছেন

তৃণমূলের সংবাদ ডেস্ক:
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাতে বিশ্বের প্রভাবশালী নেতারা শুক্রবার নিউইয়র্কে তার হোটেল স্যুটে সমবেত হন। এ সময় তারা বাংলাদেশকে সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের অবসরে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে নেতৃত্ব দেন লাটভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও নিজামি গঞ্জাভি আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের (এনজিআইসি) সহসভাপতি ভাইরা ভিকে-ফ্রেইবারগা। উল্লেখ্য, এনজিআইসি’র নামকরণ করা হয়েছে ১১শ শতকের খ্যাতিমান পারস্য কবি নিজামি গঞ্জাভির নামে। (সূত্র: বাসস)

এই উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলে ছিলেন—স্লোভেনিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বরুত পাহোর, সার্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বোরিস তাদিচ, লাটভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট এগিলস লেভিটস, ইউরোপীয় কাউন্সিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বেলজিয়ামের সাবেক প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল, গ্রিসের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জর্জ পাপান্দ্রেউ, বুলগেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট রোসেন প্লেভনেলিভ ও পেতার স্তোইয়ানোভ, ক্রোয়েশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো যোসিপোভিচ, বসনিয়া-হার্জেগোভিনার সাবেক প্রেসিডেন্ট ম্লাদেন ইভানিচ এবং মরিশাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট আমিনা গুরিব-ফাকিম।

এছাড়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমনওয়েলথের সাবেক মহাসচিব, জর্জিয়ার সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের চারজন সাবেক সভাপতি, একাধিক সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বিশ্বব্যাংকের সাবেক সহসভাপতি ও এনজিআইসির সহসভাপতি ইসমাইল সেরাগেলদিন, মানবাধিকার সংস্থা রবার্ট এফ. কেনেডি হিউম্যান রাইটস–এর প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডি, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এবং জর্জটাউন ইনস্টিটিউট ফর উইমেন, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটির ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধিরা।

banner

নেতারা ড. ইউনূসের আজীবন দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি জানিয়ে বলেন—
“আমরা আপনাকে ও বাংলাদেশের জনগণকে সমর্থন জানাতে এখানে এসেছি। আমরা সবসময় আপনার পাশে থাকব।”

তারা আরও উল্লেখ করেন, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে দীর্ঘ ১৬ বছরের দুর্নীতি, শোষণ ও অপশাসনের কারণে দেশটি এখন কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে।

বিভিন্ন নেতা অন্তর্বর্তী সরকারকে পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে সহায়তার আশ্বাস দেন। তাদের একজন বলেন, “আমরা আপনার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। যেকোনো সহযোগিতা বা পরামর্শের প্রয়োজন হলে জানাবেন।”

সম্প্রতি ঢাকা সফর শেষে কেরি কেনেডি বাংলাদেশের মানবাধিকার অগ্রগতির প্রশংসা করেন। অন্যদিকে, জর্জটাউন ইনস্টিটিউট ফর উইমেন, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটির নির্বাহী পরিচালক মেলান ভারভিয়ার জানান, তারা শিগগিরই জুলাই বিপ্লবের প্রতি আনুষ্ঠানিক সমর্থন ঘোষণা করবে। এ সময় এনজিআইসি’র সহসভাপতি ইসমাইল সেরাগেলদিন বলেন, “আপনাদের প্রয়োজন হলে আমরা আছি।”

অধ্যাপক ইউনূস অপ্রত্যাশিত এই সমর্থনে গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন,
“এটি সত্যিই অবিশ্বাস্য। আমাদের পাশে একত্রে দাঁড়ানো আপনাদের সমর্থন আমাকে মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশ গত ১৬ বছর যেন রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের মধ্যে ছিল।”

তিনি আরও বলেন, সীমিত সম্পদের কারণে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
“মানুষ তাৎক্ষণিক পরিবর্তন দেখতে চায়। তবে তরুণদের স্বপ্ন পূরণ করাই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য—তারা নতুন বাংলাদেশ দেখতে চায়।”

প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সমর্থন করার আহ্বান জানান। তার ভাষায়, “আপনাদের দিকনির্দেশনা ও নৈতিক সমর্থন আমাদের জন্য অমূল্য।”

সভায় এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন।

এই সম্পর্কিত আরো পোস্ট দেখতে পারেন

কমেন্ট লিখুন