নিজস্ব সংবাদদাতা:
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবিলায় নিজস্ব সামর্থ্যকে কাজে লাগিয়ে সবাইকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন । তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে কোনো দুর্যোগে স্থানীয় জনগোষ্ঠী সবার আগে এগিয়ে আসে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম সারির দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বলে তিনি উল্লেখ্য করেন।
গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের জলবায়ু অর্থায়ন বিষয়ে তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘জলবায়ু অর্থায়নে নেভিগেট করা : মিডিয়া রিপোর্টিং’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম বলেন, অর্থনীতি, রাজনীতি, স্বাস্থ্য ইত্যাদি নানা বিষয়ের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রয়েছে। জলবায়ু অভিযোজনে ক্ষতিগ্রস্তদের গল্প বহির্বিশ্বে তুলে ধরার জন্য তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমনকে জাতীয় কৌশলগত অগ্রাধিকারে রেখেছে। এ সংক্রান্ত কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাঠপর্যায়ে একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে পিকেএসএফ, যা প্রশংসনীয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় ইআরডি সচিব মো: শাহ্রিয়ার কাদের ছিদ্দিকী, বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে নেতৃত্ব প্রদর্শন করছে। “আমাদের এ যাত্রা দীর্ঘ। এ জন্য আমাদের সবাইকে- সরকার, উন্নয়ন সহযোগী, সুশীল সমাজ, বেসরকারি খাত ও সংবাদমাধ্যম- একসাথে কাজ করতে হবে”। তিনি বলেন, ইআরডি মূলত উন্নয়ন সহযোগীদের সাথে আর্থিক সম্পর্কের বিষয়ে সংযোগের সেতু হিসেবে কাজ করে। এই সংযোগের জন্য আমাদের দরকার হয় প্রয়োজনীয় তথ্য, উপাত্ত। বিভিন্ন বৈশ্বিক ফোরামে সাংবাদিকদের মাধ্যমে উপস্থাপিত তথ্য ও প্রতিবেদন আমাদের কৌশলগত আলোচনাকে সফলভাবে উপস্থাপন করতে সাহায্য করে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পিকেএসএফ চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান বলেন, পিকেএসএফ বর্তমানে দেশের ২ কোটিরও বেশি স্বল্পআয়ের পরিবারের সাথে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি কর্তৃক বাস্তবায়িত কার্যক্রমগুলোর মধ্যে মানুষের পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবিলায় অর্থসংস্থান সম্পর্কে অধিকতর দক্ষ করে তুলতে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে সাংবাদিকরা আরো দক্ষতার সাথে জলবায়ুর পরিবর্তন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রণয়ন করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
স্বাগত বক্তব্যে পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: ফজলুল কাদের বলেন, পিকেএসএফের ‘কৌশলগত পরিকল্পনা ২০২৫-২০৩০’-এ জলবায়ু অভিযোজন বিষয়ক কার্যক্রমকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের জন্য ক্লাইমেট জাস্টিস বা জলবায়ু ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমকর্মীদের আরো উদ্যমী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি।
প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য বর্ণনা করে ইআরডি’র অতিরিক্ত সচিব এ কে এম সোহেল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিগ্রস্ত দেশের শীর্ষে বাংলাদেশের অবস্থান। এ ঝুঁকি কমানোর জন্য আমাদের দরকার বৈদেশিক সহায়তা ও উন্নত বিশ্বের কমিটমেন্ট। জলবায়ু অভিযোজন বিষয়ে আমাদের জনগণকে সচেতন ও বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে এর চিত্র তুলে ধরার জন্য এ প্রশিক্ষণের আয়োজন।