কলমেঃ হান্নান মোরশেদ (রতন), কবি ও সংগঠক:
___
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম—আমাদের বিদ্রোহের অনুপ্রেরণা, মানবতার কণ্ঠস্বর এবং শোষিতের অধিকার রক্ষার চিরসাথী। তাঁর কলমে যেমন ছিল বিদ্রোহের অগ্নিশিখা, তেমনি ছিল প্রেম, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের অবারিত বার্তা। আজ তাঁর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।
নজরুল ছিলেন সাম্য ও ন্যায়ের কবি। তিনি ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের ভেদাভেদকে অস্বীকার করে গেয়েছিলেন মানুষের মহিমার গান। সমাজের অবহেলিত মানুষের পক্ষে তিনি গর্জে উঠেছিলেন অকুতোভয়ে। তাঁর কবিতা, গান ও প্রবন্ধ আমাদের জাতীয় চেতনায় আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে, মুক্তির সংগ্রামে দিয়েছে দিকনির্দেশনা।
আজকের বাংলাদেশে নজরুলের শিক্ষা আরও প্রাসঙ্গিক। বৈষম্য, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, ধর্মীয় বিভেদ ও মানবতার অবমাননা এখনো আমাদের সমাজকে গ্রাস করছে। নজরুলের মতো করে যদি আমরা সাম্যের আলোয় মানবতার পথে হাঁটতে পারি, তবে তাঁর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে।
জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী কেবল স্মরণ নয়, বরং তাঁর আদর্শ ধারণ করার শপথ নেওয়ার দিন। আমরা চাই, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতিটি স্তরে নজরুলের চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গি ছড়িয়ে পড়ুক। শুধু কবিতা পাঠ নয়, তাঁর মানবিকতা, সাম্যবাদী চেতনা এবং বিদ্রোহী মনোভাবকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিফলিত করা হোক।
জাতীয় কবির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে আমাদের একথা মনে রাখতে হবে—নজরুল কেবল অতীত নন, তিনি বর্তমান ও ভবিষ্যতের আলোকবর্তিকা।