হৃদরোগ আজকের দিনে অন্যতম বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বিশ্বে যত মানুষের মৃত্যু হয় তার মধ্যে সর্বোচ্চ অংশই হয় হার্টের রোগে। তাই হার্টের অসুখ হওয়ার আগে থেকেই হার্টের যত্ন নেওয়া জরুরি।
চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রতিদিনের কোন ৭টি অভ্যাস হার্টকে সুস্থ ও সবল রাখে-
১. নিয়মিত শরীরচর্চা
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, সাইক্লিং বা হালকা দৌড়ানোর মতো কার্যকলাপ হার্টের জন্য খুবই উপকারী। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন (২০২১) জানায়, নিয়মিত ব্যায়াম রক্তসঞ্চালন উন্নত করে এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
২. পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
হার্ট ভালো রাখতে চাইলে নিয়মিত শাকসবজি, ফল, পূর্ণ শস্য, বাদাম ও মাছ খাওয়া উচিত। ২০২০ সালে জার্নাল অব নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত গবেষণা বলছে, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।
৩. লবণ ও চিনি কমানো
অতিরিক্ত লবণ উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায় এবং চিনি ওজন ও ডায়াবেটিসের সমস্যা তৈরি করে। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, প্রতিদিন ৫ গ্রামের বেশি লবণ না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
৪. পর্যাপ্ত ঘুম
প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুম হার্টের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ২০১৯ সালে প্রকাশিত ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নাল-এর এক গবেষণা জানায়, যারা কম ঘুমান তাদের হৃদ্রোগের ঝুঁকি দ্বিগুণ বেশি।
৫. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
স্ট্রেস বাড়লে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং হার্টের ওপর চাপ পড়ে। মেডিটেশন, প্রার্থনা, গান শোনা বা হালকা হাঁটা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল স্টাডি (২০২০)-তে দেখা গেছে, নিয়মিত রিল্যাক্সেশন টেকনিক হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।
৬. ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা
তামাক সেবন হার্টের সবচেয়ে বড় শত্রুগুলোর একটি। ধূমপায়ীদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি দ্বিগুণ বেশি। সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, ধূমপান ছেড়ে দিলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই হৃদ্স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে শুরু করে।
৭. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা
হৃদরোগের লক্ষণ না থাকলেও মাঝেমাঝে ব্লাড প্রেসার, কোলেস্টেরল ও ব্লাড সুগার চেক করা উচিত। এতে হার্টের ঝুঁকি দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব হয়। জার্নাল অব কার্ডিওভাসকুলার মেডিসিন বলছে, প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে হৃদ্রোগের জটিলতা অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায়।
সূত্র: আলোকিত বাংলাদেশ