এস,এম তফিজ উদ্দিনঃ
সিরাজগঞ্জে এবার ড্রাগন ফল বাগান চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। এ ফলের বাজার ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। লাভজনক এ চাষাবাদে কৃষকেরা আগ্রহী হয়ে উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে এ চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চাষাবাদ করেছে কৃষকেরা। এ জেলার উল্লাপাড়া, কাজিপুর, রায়গঞ্জ ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এ ফল চাষাবাদ বেশি হয়েছে। প্রতিবছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করতে হয়। তবে সারা বছরেও হাইব্রিড জাতের ড্রাগন ফল চাষ করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে উচু, দোআঁশ ও বালি জাতীয় জমিতে এ চাষাবাদ ভালো হয় এবং অনেক স্থান থেকে এ চারা সংগ্রহ করে জমিতে রোপন করা হয়। এসব চারার মধ্যে রয়েছে বাউ-১, ২ ও ৩। অবশ্য এ অঞ্চলে বাউ-৩ ড্রাগন ফল বাগান বেশি চাষাবাদ হয়ে থাকে। এ ফল চাষাবাদে স্থানীয় কৃষকেরা বলেছেন, এ ফল চাষাবাদে জমির ২ গজ পরপর সিমেন্টের খুটি ও জিআই তার দিয়ে স্ট্রাকচার তৈরী করতে হয়। এ স্ট্রাকচার বাগান ঘিরে এ ফলের চারা রোপণ করতে হয়। প্রায় ৬ মাস পর এ বাগানে ড্রাগন ফল গাছে ফুল ফুটে থাকে প্রায় সূর্যমূখী ফুলের মতো। এ ফুল থেকেই ড্রাগন ফলের উৎপন্ন হয়ে থাকে। এ বাগানে সেলফি তোলারও হিড়িক পড়ে সকাল ও বিকেলে। আর এ স্ট্রাকচারে ৬/৭ বছর পর্যন্ত এ ফলের উৎপাদন হয়ে থাকে। এবার এ ফল বাগান চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। খরচ কম লাভ বেশি এ ফল বাগান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে কৃষকেরা। এরমধ্যে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ব্রক্ষ্মখোলা গ্রামের আদর্শ কৃষক ও উদ্যোক্তা এস এম ইদ্রিস আলী (৬৪) এবার তার ২ বিঘা জমিতে বাউ-৩ ড্রাগন ফল বাগান চাষাবাদ করেছেন। গত বছরের চেয়ে এবার উৎপাদনও বেশি হয়েছে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ২০২৩ সাল থেকেএ ড্রাগন ফল বাগান চাষাবাদ শুরু করি। এ চাষাবাদে প্রথমে কিছুটা ক্রটি ঘটলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের এ চাষাবাদে সফলতা পাচ্ছি। এ বাগানের উৎপাদিত ফল স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতি কেজি গড়ে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি করছি এবং বর্তমান বাজারে প্রতিকেজি ফল গড়ে ১৬০ টাকা থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বাগান থেকে পৌনে ২ মেঃ টন ফল বিক্রি করা হয়েছে এবং আরো ৫/৬ মেঃ টন ফল উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বহুলী গ্রামের বন্ধু দেলোয়ার হোসেনও এ চাষাবাদ শুরু করেছেন এবং আরো অনেকে বাগান দেখে এ চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আঃ জাঃ মুঃ আহসান শহীদ সরকার বলেন, এ চাষাবাদে কৃষকের চারা সংগ্রহসহ সব ধরণের সহযোগীতা করা হচ্ছে এবং এ লাভজনক চাষাবাদে কৃষক আগ্রহী হয়ে উঠছে। এবার এ চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে বাজার ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রতিবেদকঃ এস,এম তফিজ উদ্দিন, স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ।
16
পূর্ববর্তী পোস্ট