তৃণমূলের সংবাদ ডেস্ক:
প্রবেশপথ, রোগী ও স্বজনের বসার স্থান থেকে চিকিৎসকের কক্ষ– সর্বত্রই উপস্থিত ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। রোগীদের হাত থেকে ব্যবস্থাপত্র টেনে নিয়ে মোবাইল ফোনে ছবি তুলছেন তারা। নিত্যদিনের এমন চিত্র সিরাজগঞ্জ সরকারি বক্ষব্যাধি হাসপাতালের।
এদিকে সরকারি হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের অবাধ বিচরণের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এখন থেকে সপ্তাহে দুদিনে মোট পাঁচ ঘণ্টা চিকিৎসকদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন তারা। নির্দেশনার প্রথম দিন থেকেই এ বিধান মানছেন না ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। বারবার নিষেধ করার পরও বন্ধ হচ্ছে না তাদের অবাধ বিচরণ। এতে রোগী, স্বজন ও চিকিৎসকরা হয়রানি ও বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সিরাজগঞ্জ জেলা শহরের গোশালা এসবি ফজলুল হক রোডে সরকারি বক্ষব্যাধি হাসপাতালের অবস্থান। সোমবার সকাল থেকেই হাসপাতালের প্রবেশপথে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ভিড় শুরু হয়। স্বাস্থ্য বিভাগের নতুন ‘পরিপত্র বা বিধিমালা’ তারা প্রথম দিনেই ভঙ্গ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিপত্র অনুযায়ী, সপ্তাহের দুদিন সোমবার ও বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে আড়াই পর্যন্ত ঢুকতে পারবেন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। কিন্তু জেলা শহরের সরকারি এ হাসপাতালে সকাল ৯টা থেকেই কোম্পানির প্রতিনিধিরা চলে আসেন। উপচে পড়া ভিড় থাকলেও তা নিয়ে মাথাব্যথা ছিল না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা
বিভিন্ন অজুহাতে দোতালায় উঠে চিকিৎসক ও মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। কেউ থাকেন হাসপাতালের ফটকের সামনে। আবার কেউ স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর অফিস ও মসজিদের সামনে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিপত্র কেউই অনুসরণ করেননি।
স্থানীয় বাসিন্দা ফরিদ উজ্জমান বলেন, আর কোনো হাসপাতালে এত পরিমাণ বিক্রয় প্রতিনিধির উপস্থিতি দেখা যায় না। প্রতিদিন দেড়-দুইশ জন এখানে ভিড় জমান। এখানে জুনিয়র কনসালট্যান্ট নেই। মেডিকেল অফিসারও একজন। অথচ ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি আসেন শত শত। বিষয়টি বোধগম্য নয়।’
গোশালা মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা বলেন, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাসপাতালে আসার কথা দুপুর ১২টার পর। কিন্তু তারা সকাল ৯টার আগেই চলে আসেন। রোগীদের ব্যবস্থাপত্রের ছবি তোলা নিষেধ থাকলেও তারা মানছেন না।
মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফুর রহমান মিথুন বলেন, আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোনো নির্দেশনা পাইনি। সিভিল সার্জন অফিস থেকেও কিছু বলা হয়নি। দুপুর ১২টার পর সাক্ষাৎকারের সময় নির্ধারণ থাকলেও কোম্পানির প্রতিনিধিরা তা মানবে না।
ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি আলি হোসেন বলেন, নতুন পরিপত্রের বিষয়ে অবগত নই।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন নুরুল আমীন বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিপত্রের কপি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি ও চিকিৎসকদের কাছে পাঠানো হয়েছে। বক্ষব্যাধি হাসপাতালেও তা দেওয়া হয়েছে। এর পরও তাদের এমন করার কথা নয়। বিষয়টি দেখছি।