Home » পথেই থামল আনন্দযাত্রা বাবা-মেয়েসহ নিহত ৩

পথেই থামল আনন্দযাত্রা বাবা-মেয়েসহ নিহত ৩

মিরসরাইয়ে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনা

0 মন্তব্য গুলি 4 জন দেখেছে 2 মিনিট পড়েছেন

ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন গোলাম সরওয়ার। সঙ্গে ছিলেন এক সহকর্মীও। ঢাকা থেকে প্রাইভেটকারে যাত্রা করেছিলেন চট্টগ্রামের উদ্দেশে; কিন্তু পথে এক ধাক্কায় থেমে যায় তাদের সেই আনন্দযাত্রা। প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান বাবা-মেয়েসহ তিনজন।

গতকাল শুক্রবার সকালে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ঠাকুরদীঘি এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এদিকে সিরাজগঞ্জ সদরে প্রাইভেটকার চাপায় একজন নিহত হয়েছেন।

মিরসরাইয়ে দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন ঢাকার উত্তরা এলাকার মৃত এমদাদুল হকের ছেলে গোলাম সরওয়ার (৪২), তার তিন বছরের মেয়ে মুসকান এবং সরওয়ারের সহকর্মী সাগর (৩০)। আহত হয়েছেন সরওয়ারের স্ত্রী উম্মে সালমা, ছেলে আহমেদ ইমতিয়াজ এবং প্রাইভেটকার চালক গিয়াস উদ্দিন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত গোলাম সরওয়ারের স্ত্রী উম্মে সালমা বলেন, কাভার্ডভ্যানটির পেছনে ধাক্কা দেওয়ার পর বিকট শব্দে আমি অচেতন হয়ে পড়েছিলাম। হাসপাতালে জ্ঞান ফেরার পর জানতে পারি, আমার স্বামী ও তিন বছরের মেয়েটা আর বেঁচে নেই। আমার ছেলেটাও আহত হয়েছে। একটি দুর্ঘটনা আমার সাজানো সংসারটি তছনছ করে দিল।

banner

তিনি আহাজারি করে বলেন, ‘আল্লাহ আমারে কেন নিয়ে গেল না। আমার মাইয়া, স্বামী শেষ। আমার ইমতিয়াজ (ছেলে) না বাঁচলে আমি বাচুম না।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গোলাম সরওয়ার হাতিল ফার্নিচারের একটি শাখা ব্যবস্থাপক ছিলেন। গতকাল ছুটির দিনে স্ত্রী-সন্তানসহ সহকর্মী সাগরকে নিয়ে ঘুরতে বের হন। প্রাইভেটকারে করে তারা চট্টগ্রামে যাচ্ছিলেন। পথে তাদের সেই আনন্দের মুহূর্ত নিমেষেই বিষাদে পরিণত হয়। তাদের প্রাইভেটকারটি মিরসরাইয়ের ঠাকুরদীঘি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি কাভার্ডভ্যানের নিচে ঢুকে যায়। এতে প্রাইভেটকারের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই নিহত হন সরওয়ার ও তার মেয়ে মুসকান। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাগর।

মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রাজু চন্দ্র নাথ বলেন, দুর্ঘটনায় আহত চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার এসআই বোরহান উদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িগুলো পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন পথচারীকে চাপা দিয়েছে। এ ঘটনায় হাফিজুল নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। গতকাল সকালে সিরাজগঞ্জ-কড্ডা আঞ্চলিক সড়কে সদর উপজেলার কাশিয়াহাটা বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত হাফিজুল কাশিয়াহাটা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। সদর থানার ওসি মোখলেসুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লার লাকসামে বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। ওইদিন বিকেলে দুর্ঘটনায় আহত হয়ে তারা চিকিৎসাধীন ছিলেন। রাতে তাদের মৃত্যু হয়। তারা হলেন মোহাম্মদপুর গ্রামের মাজেদা খাতুন (৬০) এবং নাওটি গ্রামের অটোরিকশাচালক রাসেল মিয়া (২০)।

(প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন সিরাজগঞ্জ, চট্টগ্রামের মিরসরাই ও কুমিল্লার লাকসাম প্রতিনিধি)

“সুত্র: দৈনিক কালবেলা”

এই সম্পর্কিত আরো পোস্ট দেখতে পারেন

কমেন্ট লিখুন