Home » তারকা আইনজীবীদের বিদায়ে আইনাঙ্গনে গভীর শূন্যতা

তারকা আইনজীবীদের বিদায়ে আইনাঙ্গনে গভীর শূন্যতা

0 মন্তব্য গুলি 108 জন দেখেছে 2 মিনিট পড়েছেন

আমিনুল ইসলাম মল্লিক

কয়েক বছরের ব্যবধানে দেশের আইনাঙ্গন হারিয়েছে বেশ কয়েকজন তারকা আইনজীবীকে। যাদের কণ্ঠস্বর আদালতে ছিল পথনির্দেশকের মতো, সাংবিধানিক সংকটকালে যারা পালন করেছেন অভিভাবকের ভূমিকা। বড় কোনো সাংবিধানিক বা আইনি জটিলতা দেখা দিলেই আদালতের বন্ধু (অ্যামিকাস কিউরি) হয়ে যাদের মতামত নির্ভরযোগ্য দিকনির্দেশনা দিত, এমন কয়েকজন মহীরুহের বিদায়ে আইনাঙ্গনে শুধু শূন্যতাই বিরাজ করছে না, তাদের বিদায় বিচারব্যবস্থার জন্য এক এক বিশাল শোকগাথাও।

টি এইচ খান, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক, খন্দকার মাহবুব হোসেন, আব্দুল বাসেত মজুমদার, এ জে মোহাম্মদ আলী, আব্দুল মতিন খসরুসহ অনেক দিকপাল আইনজীবী আর নেই।

তারা কেউ ছিলেন সাংবিধানিক আইন বিশেষজ্ঞ, কেউ সিভিল, কেউবা ফৌজদারি আইনের কৃতী। সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের প্রতিটি আদালতে একনামেই পরিচিতি ছিল তাদের।

banner

প্রয়াত এসব আইনজ্ঞ প্রথিতযশা আইনজীবী ছিলেন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘বর্তমানে যারা আইন পেশায় আছেন তাদের মধ্যে অনেক ভালো জানাশোনা ও চৌকস আইনজীবী আছেন। এদের মধ্য থেকেই পরপারে চলে যাওয়া সিনিয়রদের শূন্য জায়গা পূরণ হবে, তবে সময় লাগবে। কারণ যারা প্রয়াত হয়েছেন তাদের অভিজ্ঞতা ছিল দীর্ঘ।

‘রফিক উল হক, মাহবুবে আলম, খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক কিংবা আবদুল মতিন খসরু-তারা প্রত্যেকেই প্রথিতযশা আইনজীবী ছিলেন। উনারা পরিশ্রম করে তাদের অবস্থান তৈরি করেছিলেন। তারা আইনকানুন জানতেন, প্রতিনিয়ত পড়তেন, অনুশীলন করতেন।”

সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ও বার কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘উনাদের মতো পেশাদারিত্ব, নীতি-নৈতিকতা, জ্ঞান অর্জন, সততা দক্ষতা ও সাহসিকতা অর্জন করতে হবে আমাদের। লেগে থাকতে হবে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়ভাবে কাজ করতে হবে। আমাদের যেসব বিজ্ঞ সিনিয়র স্যারেরা পরপারে চলে গেছেন তাদের পথ যথাযথভাবে আমাদের অনুসরণ ও অনুকরণ করতে হবে। হয়তোবা অল্প সময়ের মধ্যে এই শুন্যতা পূরণ হবে না। সময় লাগবে। কিন্তু সময় লাগবে বলে বসে থাকা যাবে না। বর্তমানেও অনেক সিনিয়র আইনজীবী আছেন পেশায় ভালো। আমাদের সমসাময়িক বা জুনিয়র কিছু বন্ধু আছেন তারাও ভালো করার চেষ্টা করছেন।

প্রয়াত দিকপাল আইনজীবীরা

বিচারপতি টি এইচ খান

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও আন্তর্জাতিক আদালতের সাবেক বিচারপতি টি এইচ খান। ১৯২০ সালে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে জন্ম নেন তিনি। ১৯৪৭ সালে আইন পেশায় যোগ দেন। ১৯৬৮ সালে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৭৩ সালে আবার আইন পেশায় ফেরেন। বিএনপি সরকারের মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি তিনি মারা যান।

ব্যারিস্টার রফিক-উল হক

দেশের অন্যতম শীর্ষ আইনজীবী ছিলেন তিনি। ছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেলও। শেখ মুজিবুর রহমান থেকে শুরু করে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার সঙ্গেও কাজ করেছেন। দুই নেত্রী কারাগারে থাকাকালে তাদের জন্য আইনি লড়াই করেন। পেশাগত জীবনে কখনও কোনো সম্মানী গ্রহণ করেননি। ২০২০ সালের ২৪ অক্টোবর তার মৃত্যু আইনাঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি ডেকে আনে।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ

প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, উপ-রাষ্ট্রপতির মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। আইন পেশার পাশাপাশি ছিলেন রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। ২০২১ সালের ১৬ মার্চ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

খন্দকার মাহবুব হোসেন

দেশের প্রখ্যাত ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রধান কৌঁসুলি ছিলেন। পরে বিএনপিতে যোগ দেন এবং ভাইস চেয়ারম্যান পর্যন্ত পদে আসীন হন। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।সূত্রঃ ঢাকা মেইল

এই সম্পর্কিত আরো পোস্ট দেখতে পারেন

কমেন্ট লিখুন