ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে একসঙ্গে ছয় সন্তানের জন্ম দিয়েছেন প্রিয়া নামে এক গৃহবধূ। এদের মধ্যে তিনজন ছেলে ও তিনজন মেয়ে। ওজন কম হওয়ায় তিনজনকে ঢামেক হাসপাতালে এনআইসিইউতে ও বাকি তিনজনকে রাজধানীর কাঁটাবনের একটি বেসরকারি হাসপাতালের এনআইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার সকাল ৯টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে ২১২ নম্বর ওয়ার্ডে সন্তানদের জন্ম দেন প্রিয়া।
প্রিয়ার খালু বাবুল বলেন, তারা নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে এসেছেন। প্রিয়ার স্বামীর নাম হানিফ। তিনি কাতার প্রবাসী।
ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ইউনিট-১ এর সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবিদা সুলতানা বলেন, শনিবার রাতে প্রিয়া হাসপাতালে ভর্তি হন। সকালে তিনি একসঙ্গে ছয় সন্তানের জন্ম দেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটি ‘বেবি’ বলা যায় না। এটি আসলে ২৭ সপ্তাহের ‘ইনএবিটেবল অ্যাবরশন’। এর আগে প্রিয়ার একটি পূর্ণবয়স্ক শিশু জন্ম হয়েছিল। তবে সেটি জন্মগ্রহণের সময় মারা যায়। এবার জন্ম নেওয়া ছয় নবজাতকের মধ্যে তিনজনের ওজন প্রায় ৯০০ গ্রাম ও বাকি তিনজনের ৮০০ গ্রাম।
ডা. আবিদা সুলতানা আরও বলেন, আমাদের দেশে সাধারণভাবে ২৮ সপ্তাহকে ‘ভায়াবল এইজ’ হিসাবে ধরা হয়। ঢামেকের উন্নত এনআইসিইউ ফ্যাসিলিটি থাকায় ভাগ্যে থাকলে শিশুরা বেঁচে যেতে পারে। তিনি যোগ করেন, সাধারণত একসঙ্গে ছয়টি শিশু গর্ভে ধারণ করা স্বাভাবিকভাবে সম্ভব নয়। রোগী ওভুলেশন ইন্ডাকশন ড্রাগ সেবন করেছিলেন, যার কারণে একসঙ্গে একাধিক সন্তান ধারণ করেছেন। জরায়ুর সীমিত ধারণক্ষমতার কারণে আগেভাগেই ডেলিভারি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ইনফার্টিলিটি চিকিৎসা নিলে গর্ভধারণের পর রোগীকে নিয়মিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হয়। অনেক সময় রোগীরা প্রথম ধাপ পার হয়ে গেলে আর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন না, তখনই এ ধরনের ঘটনা ঘটে।
এদিকে, ঢামেক হাসপাতালের এনআইসিইউতে রোববার সন্ধ্যার দিকে একটি ছেলে নবজাতক মারা যায়। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রিয়ার ননদ ফারজানা আক্তার জানান, ৬ নবজাতকের মধ্যে তিন শিশুকে ঢাকা মেডিকেলের এনআইসিইউতে আর বাকি তিন শিশুকে বেসরকারি হাসপাতালের এনআইসিইউতে রাখা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলে থাকা এক ছেলে নবজাতক সন্ধ্যায় মারা যায়।
“সুত্র: দৈনিক যুগান্তর”