Home » আগামী দিনের প্রযুক্তি জগৎ বদলে দিচ্ছে বুদ্ধিমত্তা

আগামী দিনের প্রযুক্তি জগৎ বদলে দিচ্ছে বুদ্ধিমত্তা

0 মন্তব্য গুলি 10 জন দেখেছে 2 মিনিট পড়েছেন

 

নাহিয়ান ইসলাম
প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির যুগে বসবাস করছে বর্তমান বিশ্ব। প্রতিদিন
জীবনযাত্রা বদলে যা”েছ নতুন নতুন আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে। এরমধ্যে
সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স )।
এটি শুধু প্রযুক্তি প্রেমীদের আলোচনার বিষয় নয়, বরং রাষ্ট্র, অর্থনীতি, শিক্ষা,
স্বাস্থ্য  ও সংস্কৃতির প্রতিটি স্তরে এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা উঠছে। অনেকে
একে চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের চালিকাশক্তি বলছেন। এর ইতিবাচক দিকগুলো যেমন
অসীম, তেমনি কিছু ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জও রয়েছে।কিন্তু  এক্ষেত্রে প্রশ্ন হচ্ছেঃ —
এ.আই. আমাদের ভবিষ্যৎকে কতটা বদলে দেবে? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এমন এক প্রযুক্তি
যা মানুষের মতো চিন্তা, শেখা এবং সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা অনুকরণ করতে পারে।
এটি ডেটা বিশ্লেষণ করে, প্যাটার্ন খুঁজে বের করে এবং সেই অনুযায়ী ভবিষ্যৎ
সিদ্ধান্ত বা পূর্বাভাস দেয়। এক সময় মানুষের হাতে তৈরি প্রোগ্রাম ছাড়া
কম্পিউটার কিছুই করতে পারত না।কিন্তু এখন এআই কম্পিউটারকে  শেখানো হয় যাতে তারা নিজেই ডেটা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন সমাধান বের করতে
পারে। আজ আমরা গুগল ম্যাপের রুট সাজেশন, ইউটিউব বা নেটফ্লিক্সের
রিকমেন্ডেশন, কিংবা স্মার্টফোনের ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টে এআই-এর ব্যবহার
চোখে দেখছি। স্বাস্থ্যখাতে  এআই-এর সবচেয়ে বড় সুফল ভোগ করছে। আগে
যেখানে জটিল রোগ শনাক্ত করতে সময় লাগত, এখন এআই-ভিত্তিক অ্যালগরিদম
কয়েক সেকেন্ডেই হাজারো এক্স-রে বা এমআরআই রিপোর্ট বিশ্লেষণ করতে পারে।
মহামারির সময় রোগীর সংখ্যা, সংক্রমণ হার ও ভবিষ্যৎ পূর্বাভাসে এআই কার্যকর
প্রমাণিত হয়েছে। অনলাইন ডাক্তারি সেবা বা টেলিমেডিসিনে এআই
চ্যাটবট রোগীর প্রাথমিক প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে । শিক্ষা এখন আর শুধু বই আর
শ্রেণিকক্ষে সীমাবদ্ধ নয়। এআই-ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম শিক্ষার্থীর শেখার ধরণ, গতি
এবং আগ্রহ বিশ্লেষণ করে তার জন্য আলাদা পাঠ্যসূচি তৈরি করতে পারে। একজন
শিক্ষার্থী গণিতে দুর্বল হলে এআই তার জন্য সহজ থেকে জটিল ধাপ সাজিয়ে
দেয়। অনলাইন কোর্স প্ল্যাটফর্মে এআই শিক্ষক বা গাইড হিসেবে কাজ করছে।
পরীক্ষা নেয়া, উত্তরপত্র মূল্যায়ন কিংবা ক্লাস পারফরম্যান্স বিশ্লেষণেও এআই ব্যবহৃত
হচ্ছে । আজকের দিনে ব্যবসা মানেই ডেটা। এআই এই ডেটা বিশ্লেষণ করে
ব্যবসায়ীদের ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করছে।

ই-কমার্স: গ্রাহকের পছন্দ  অনুযায়ী পণ্য সাজেস্ট করা হচ্ছে  ব্যাংকিং: প্রতারণা বা জালিয়াতি শনাক্তে

এআই নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে । কর্মক্ষেত্র: অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের দক্ষতা মূল্যায়ন ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এআই টুল ব্যবহার করছে। পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এআই ডেটা বিশ্লেষণ করে কার্যকর সমাধান দিতে পারবে। মহাকাশ
গবেষণা ও রোবটিক্সে এআই নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আর
ভবিষ্যতের কোনো স্বপ্ন নয়, এটি এখন বাস্তব।স্বাস্থ্য , শিক্ষা, ব্যবসা,
বিনোদনসহ প্রতিটি খাতেই এআই বদলে দিচ্ছে  আমাদের জীবন। তবে এর ব্যবহার
যেন মানবিক মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, সে দিকেও নজর দিতে হবে। যদি
প্রযুক্তির এই নতুন যুগকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়, তবে কৃত্রিম
বুদ্ধিমত্তা কেবল জীবন সহজ করবে না, বরং আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত
ও নিরাপদ পৃথিবীও গড়ে তুলবে।

banner

এই সম্পর্কিত আরো পোস্ট দেখতে পারেন

কমেন্ট লিখুন